বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে কাজী নজরুল ইসলাম একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছেন। তাকে কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে—এই প্রশ্নটি সাহিত্যপ্রেমীদের মধ্যে সর্বদাই আলোচনার বিষয়। কাজী নজরুল ইসলাম শুধু একজন কবি ছিলেন না, তিনি ছিলেন যুগান্তকারী চিন্তাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। তার সাহিত্য, গান ও জীবনদর্শনে ছিল বিদ্রোহ এবং মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার বার্তা।
১৯২০-এর দশকে ইংরেজি শাসনের বিরুদ্ধে তার লেখা কবিতা, গান ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি জনসাধারণের মধ্যে নতুন এক ভাবনা জাগ্রত করেন। সমাজের অবিচার, দারিদ্র্য, শোষণ এবং রাজনৈতিক দমন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণে তাকে ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে সম্বোধন করা হয়। মূলত, এই উপাধিটি তাকে প্রদান করেছিলেন তার সমকালীন সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরা, যারা তার সাহিত্যের প্রভাব অনুভব করেছিলেন।
বিশেষ করে, বাংলা সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ আরও অনেক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী মনোভাব এবং সাহসী প্রকাশভঙ্গি দেখে তাকে এই সম্মানসূচক উপাধি দেন। তার বিদ্রোহী কবিতা যেমন ‘বিদ্রোহ’, ‘সাম্যবাদী’, ‘মানবতার গান’, সমাজের নানা অসঙ্গতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ প্রকাশ পায়। এই কারণে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি বলা হয়।
আজকের দিনে কাজী নজরুল ইসলাম শুধু সাহিত্যিক চরিত্র হিসেবে নয়, বরং আদর্শবান মানবতার প্রতীক হিসেবেও সম্মানিত। তার বিদ্রোহী কবিতাগুলি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক অসাম্য, দারিদ্র্য ও শোষণের বিরুদ্ধে তার সাহসী প্রতিবাদ আজও প্রাসঙ্গিক।